আমিনুল হক,নিজস্ব প্রতিনিধি:
বঙ্গোপসাগরে ২০-৩০ বছর ধরে মাছ শিকার করছেন একেকজন জেলে। কিন্তু কারও সংসারে আসেনি সচ্ছলতা,দেখেননি আলোর মুখ। জীবনের এ বেলায় এসে পেশা পাল্টানোর সুযোগও নেই তাদের অনেকের।
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় সাগর উপকূলের জেলেদের জীবন চলছে এভাবেই।তারা জানান গত কয়েক বছর ধরে সাগরে তেমন মাছ পড়ছে না। বিশেষ করে ইলিশ মাছ। প্রজনন মৌসুমে সাগরে সরকারের মাছ শিকার বন্ধ রাখার সুফলও মিলছে না। আর মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময়ে মানবিক সহায়তার সরকারি বরাদ্দের চালও ঠিকমতো পান না বলে অভিযোগ তাদের।
আনোয়ারা রায়পুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পরুয়া পাড়া গ্রামের জেলে শহীদুল আলম,তিনি তার ছিঁড়ে যাওয়া জাল সাগর পাড়ে মেরামত করছিলেন। কথা বলে জানা গেছে,তিনি জানান-এখন সাগর উত্তাল। নৌকা ভাসানোর সুযোগ নেই। তাই এই সময়ে ছিঁড়ে যাওয়া জাল মেরামত করছেন তিনি। শহীদুল জানান, ‘২৫ বছর ধরে সাগরে যাই। গত তিন-চার বছর ধরে সাগরে তেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এখন সাগরে মাছ নেই বললেই চলে।’
স্থানীয় আরেক জেলে ইউসুফ মিয়া বলেন, ‘এখানে প্রচুর জেলে রয়েছে। গত চার বছর ধরে সাগরে তেমন মাছ নেই। লোকসান দিতে দিতে অসহায় পড়েছি। এখন এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে, আত্মীয়-স্বজনরা কথা বলতে চাইছে না, পাওনাদাররা ধার দিচ্ছে না, সুদেও মিলছে না ঋণ।’
আবদুর রহমান(৬৫) জানান, ‘আমি ১০ বছর লিবিয়ায় ছিলাম। দেশে এসে টং জাল কিনেছি। গত ১৫ বছর ধরে সাগরে মাছ শিকার করি। এবছর কোনো মাছই পাইনি। জাল বসাইছি, মাছ পাইনি। অনেক টাকা লোকসান দিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি।’
আরেকজন জেলে নুরুচ্ছফা আক্ষেপ করে বলেন, ‘গত বন্ধের সময়ে আমাদের একবার ১৫ কেজি আরেকবার ৬-৭ কেজি চাল দিয়েছে। জেলেদের নামে চাল আরও বেশি আসে। মেম্বার-চেয়ারম্যানরা ভোটের জন্য একজনের চাল অন্যজনকে ভাগ করে দেয়।’