ঢাকা | বঙ্গাব্দ

বাঁশখালীতে কাদায় আটকে থাকা হাতিটির ২৩ দিন পর মৃত্যু

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর জলদি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে কাদায় আটকে থাকা সেই আহত হাতিটিকে বাঁচানো সম্ভব হলো না।আজ শুক্রবার(২৮মার্চ) দীর্ঘ ২৩ দিন নিবিড় পরিচর্যা ও চিকিৎসার পরও সকালে প্রাণ হারায় হাতিটি।
  • আপলোড তারিখঃ 28-03-2025 ইং |
  • নিউজটি দেখেছেনঃ 103327 জন
বাঁশখালীতে কাদায় আটকে থাকা হাতিটির ২৩ দিন পর মৃত্যু ছবির ক্যাপশন: বাঁশখালীতে কাদায় আটকে থাকা হাতি
ad728



আমিনুল হক, নিজস্ব প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর জলদি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে কাদায় আটকে থাকা সেই আহত হাতিটিকে বাঁচানো সম্ভব হলো না।আজ শুক্রবার(২৮মার্চ) দীর্ঘ ২৩ দিন নিবিড় পরিচর্যা ও চিকিৎসার পরও সকালে প্রাণ হারায় হাতিটি।


চট্টগ্রাম জেলার বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা দীপান্বিত ভট্টাচার্য বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,গত “২৫ মার্চ থেকে হাতিটি মুখে খাবার নিচ্ছিল না। আমরা স্যালাইন ও অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ চালিয়ে যাচ্ছিলাম।তিনি জানান,কাদায় আটকে থাকার কারণে দীর্ঘ সময় খাবার ও পানি না পেয়ে হাতিটি আগেই খুব দুর্বল হয়ে পড়েছিল। উদ্ধারের পর কিছুটা খেতে পারলেও, শেষের তিন দিন ধরে একেবারেই খাবার বন্ধ করে দেয়। আজ(২৮মার্চ) সকাল ১১:৩৫ টার দিকে হাতিটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।”


গত ৫ মার্চ স্থানীয়দের খবর পেয়ে বন বিভাগের কর্মীরা জলদি অভয়ারণ্যের নাপোড়া বিটের গভীর বনে ঝিরির কাদায় আটকে পড়া আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সী মা হাতিটিকে উদ্ধার করেন। এরপরই দোহাজারি সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জনের তত্ত্বাবধানে হাতিটির চিকিৎসা শুরু হয়।


জানা গেছে,বন বিভাগের ১০-১২ জন কর্মী প্রতিদিন প্রায় চার কিলোমিটার পায়ে হেঁটে দুর্গম পাহাড় ও ঝিরি পেরিয়ে গিয়ে হাতিটির পরিচর্যা করেছেন। তবুও হাতিটির শারীরিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো উন্নতি হয়নি।


দীপান্বিত ভট্টাচার্য জানান, নিহত “হাতিটির ওজন ছিল দুই টনেরও বেশি। দুর্গম বনের গভীরে থাকায় হাতিটিকে উদ্ধার করে সাফারি পার্কে নেওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। দিনে যতটা সম্ভব চিকিৎসা দেওয়া হতো, তবে রাতে বন্য হাতির চলাচলের কারণে সেখানে থাকা নিরাপদ ছিল না।”


তিনি বলেন,হাতিটিকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে, “একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শে কপিকলের সাহায্যে হাতিটিকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হয়, তবে এরপর থেকেই তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে।”


চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা ডা. জুলকারনাইন জানিয়েছেন, “উদ্ধারের পর থেকে এন্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। গত ১২ মার্চ পর্যন্ত হাতির অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও, পরবর্তী সময়ে এক আন্তর্জাতিক হাতি বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ওষুধ প্রয়োগ বন্ধ করার পর অবনতি ঘটতে শুরু করে। আমরা বিভিন্ন দেশের হাতি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও শেষ পর্যন্ত হাতিটিকে রক্ষা করতে পারিনি।”


বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আবু নাসের মোহাম্মদ ইয়াছিন জানান, “আমাদের কাছে বনে আহত হাতি বা বড় বন্যপ্রাণী উদ্ধারের মতো প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নেই। এমন পরিস্থিতিতে বিশেষায়িত হেলিকপ্টার দরকার ছিল, পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসার জন্য ভেটেরিনারি হাসপাতাল প্রয়োজন ছিল—কিন্তু আমাদের কাছে কিছুই নেই।”


তিনি আরও জানিয়েছেন, “চট্টগ্রাম বিভাগের জন্য একজন মাত্র ভেটেরিনারি সার্জন রয়েছেন, সহকারী বন সংরক্ষকের ছয়টি পদ থাকলেও সবই শূন্য। এত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। গত ২৩ দিন ধরে প্রতিদিন ১২-১৩ জন কর্মী পাঁচ কিলোমিটার গভীর বনে গিয়ে হাতিটির পরিচর্যা করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচাতে পারলাম না।”


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ ADMIN

কমেন্ট বক্স
notebook

সাপাহারে জুলাই অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশ ও গণমিছিল