প্রেমের চরম নিয়তি
-আমিনুল হক নজরুল
তোমাদের হাসি-আনন্দের ভিড়ে আমি দাঁড়িয়ে আছি নিঃশব্দ এক প্রস্তরখণ্ড হয়ে।
আমার হৃদয়ের প্রেম ছিল অর্ঘ্যের মতো, অথচ তোমাদের টেবিলের এক কোণে তা পড়ে রইল উচ্ছিষ্ট হয়ে।
কে যেন বলল—ভালোবাসার বাজারে দেরিতে আসা ক্রেতার জন্য আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না, শুধু শূন্য ঝুড়ি হাতে ফেরার বেদনা।
আমি তাকাই আকাশের দিকে—
অপরিসীম নীলের ভেতরেও আজ আমার চোখে ধূসরতা।
আমি দেখি ফুলের হাসি, মানুষের উল্লাস,
কিন্তু সে-সকল রঙিন স্রোতের বাইরে আমি এক পরিত্যক্ত শিলা,
যার বুকে ফাটল আছে,
কিন্তু যার ভিতরে আর কোনো অশ্রু গড়িয়ে নামে না।
এ কি তবে প্রেমের চরম নিয়তি—
নিজেকে দগ্ধ করে, আলো জ্বেলে অন্যকে আলোকিত করা,
আর শেষে নিজেকে রূপান্তরিত করা এক নীরব সমাধি-পাথরে?
বলতে পারো প্রিয়,
কোন অপরাধে আমি আজ তোমাদের সুখের উৎসবে দাঁড়িয়ে আছি অতিথি নয়,
বরং অনাহূত ছায়া হয়ে?
তবু জানো,
এই শোকেরই ভেতরে আমি খুঁজে পাই আমার অমরত্ব,
কারণ পাথরশিলা ভাঙে না, ভাঙলেও চিরকালের জন্যে থেকে যায় তার ক্ষতচিহ্ন।