খোকন বিকাশ ত্রিপুরা জ্যাক,খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।।
খাগড়াছড়িতে এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও পাহাড়ে নারীদের নিরাপত্তার দাবিতে আধাবেলা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে সংগঠন জুম্ম ছাত্র–জনতা। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি দুপুর ১২টায় শেষ হয়।
অবরোধ চলাকালে ঢাকা–খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম–খাগড়াছড়ি, খাগড়াছড়ি–রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি–সাজেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে শতাধিক পর্যটক আটকা পড়ে ভোগান্তিতে পড়েন।
সরেজমিনে দেখা যায়, চেঙ্গী সেতু, স্বনির্ভর এলাকা, পানছড়ির পেরাছড়া ও টেকনিক্যাল স্কুল এলাকা, দীঘিনালার চার মাইল ও নয় মাইল এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধকারীরা অবস্থান নেন। তবে কিছু এলাকায় পুলিশ এসে প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে সীমিত আকারে ছোট যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করে।
আজ খাগড়াছড়ি শহরে সাপ্তাহিক বাজারের দিন হলেও পাহাড়ি ক্রেতা–বিক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল কম। অবরোধে আটকা পড়া নেন্সী বাজারের শিউলী ত্রিপুরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীঘিনালা থেকে মেরুং এলাকায় যাওয়ার পথে যানবাহন না থাকায় যেতে পারেননি। পর্যটক আলমগীর হোসেন জানান, সাজেকে হোটেল বুকিং দিয়েও যাওয়া সম্ভব হয়নি।
অবরোধের অন্যতম সমন্বয়ক উক্যনু মারমা বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবেই আমাদের পূর্বঘোষিত অবরোধ চলছে। পুলিশ কয়েক জায়গায় আগুন নেভালেও আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি শহরে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।”
খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি আবদুল বাতেন মৃধা জানান, অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি। ঢাকা থেকে আসা পর্যটকবাহী বাসগুলো পুলিশি পাহারায় নিরাপদে আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য,গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে প্রাইভেট পড়া শেষে ফেরার পথে ওই কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। রাত ১১টার দিকে স্থানীয়রা তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেনাবাহিনীর সহায়তায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
কিশোরীর বাবা জানান, “আমার মেয়ে প্রতিদিনের মতো প্রাইভেট পড়তে গিয়েছিল। নির্ধারিত সময়ে না ফেরায় খোঁজাখুঁজি করি। পরে রাত ১১টার দিকে তাকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়।”
ঘটনাটি পুরো জেলায় তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন সংগঠন দ্রুত বিচার, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং পাহাড়ে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে।