গৌরনদীতে দাদাবাড়ি বেড়াতে এসে শিশু সাফওয়ান (৫) খুনের ঘটনায় দুই নারী ও এক ইউপি সদস্যসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৯-১০ জনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের মো. ইমরান শিকদার বাদী হয়ে শুক্রবার এ মামলা করেন। আসামিদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো- নিহতের একই বাড়ির বাসিন্দা রোমান চৌধুরী, তার স্ত্রী আঁখি বেগম ও বোন রাবিনা বেগম ওরফে লাবিনা এবং শরিকল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহাবুব আলম বলেন, ‘শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে গ্রেফতারকৃত দুই নারীসহ ৪ আসামিকে বরিশাল সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। আদালতের বিচারক পরবর্তী তারিখ দিয়ে আসামিদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘মামলার অপর আসামিদেরও গ্রেফতারে অভিযান চলছে। পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।’ তবে আসামিদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সেক্ষেত্রে আরও তথ্য বের হবে বলে আশা করছেন তিনি।
গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শারমিন সুলতানা রাখি জানান, গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে খেলা করছিল সাফওয়ান। পরে সাফওয়ানের খোঁজ পড়লে তাকে আর পাওয়া যায়নি। তার সন্ধানে পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বাড়িতে খোঁজ নেওয়া হয়। কোনোভাবে সন্ধান না পেয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় শিশুটির দাদা বারেক শিকদার গৌরনদী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর পুলিশের পক্ষ থেকেও সন্ধান চালানো হয়।
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে ওই গ্রামের মান্না ব্যাপারীর বাড়ির পেছনের ডোবায় লাশ দেখে পুলিশকে এবং সাফওয়ানের বাড়িতে খবর দেন গ্রামবাসী। ঘটনাস্থলে গিয়ে সাফওয়ানের বাড়ির লোকজন লাশ শনাক্ত করেন। এরপর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারে কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার দুই দিন আগে দাদাবাড়িতে বেড়াতে আসা নিহত সাফওয়ান ঢাকায় বসবাস করে। নিহত সাফওয়ানের দাদার জমিজমা নিয়ে আসামিদের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাফওয়ানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ডোবায় ফেলে রাখা হয়।