ঢাকা | বঙ্গাব্দ

অষ্টগ্রামে নদী খননে পূরণ হচ্ছে হাওরবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি

কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামের ধলেশ্বরী নদীতে পুরোদমে চলছে ড্রেজিং এর কাজ। এই ড্রেজিং-এ উপকৃত হবে উপজেলার প্রায় দু’লক্ষ মানুষ। এটি ছিল হাওরবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি। সূত্র জানায়, চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ) এ নদীতে ড্রেজিং-এর কাজ শুরু করে।
  • আপলোড তারিখঃ 12-09-2025 ইং |
  • নিউজটি দেখেছেনঃ 8703 জন
অষ্টগ্রামে নদী খননে পূরণ হচ্ছে হাওরবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি ছবির ক্যাপশন: ড্রেজিং এর মাটিতে ভরাট করা বাহাদুরপুর ফুটবল খেলার মাঠ। ছবি : জার্নাল অব কান্ট্রি।
ad728

অষ্টগ্রামে নদী খননে পূরণ হচ্ছে হাওরবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি



অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:

কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামের ধলেশ্বরী নদীতে পুরোদমে চলছে ড্রেজিং এর কাজ। এই ড্রেজিং-এ উপকৃত হবে উপজেলার প্রায় দু’লক্ষ মানুষ। এটি ছিল হাওরবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি। সূত্র জানায়, চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ) এ নদীতে ড্রেজিং-এর কাজ শুরু করে।

স্থানীয় লোকজন জানায়, তারা বছরের পর বছর এই নদী ড্রেজিং-এর জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছিল। নদীতে খনন কাজ শুরু হওয়ায় উৎফুল্ল হাওরের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে চাকুরী জীবি, ব্যবসায়ী, কৃষক ও জেলে সম্প্রদায়।

ধলেশ্বরী উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী ও নৌপথে উপজেলা পৌঁছার প্রবেশ পথ। একসময় হাওরের এ নদীতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মালামালসহ ও যাত্রীবাহী অনেক বড় বড় নৌযান চলাচল করত। স্বল্প খরচে চলতো যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণের কাজ। কিন্তু উজান থেকে ঢলের সাথে পলি এসে ধলেশ্বরী নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে নাব্যতা সংকট দেখা দেওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে নদী শুকিয়ে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

নদীতে পানি না থাকায় কৃষি মৌসুমে হাওরে দেখা দেয় সেচ ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। মানবেতর জীবন যাপন করছে জেলে সম্প্রদায়। সঙ্গত কারণেই এই নদী খনন ছিল তাদের সময়ের দাবী। এলাকাবাসীর চাহিদার প্রেক্ষিতে বিআইডব্লিউটিএ’র মাধ্যমে ধলেশ্বরী নদীতে ড্রেজিং শুরু হওয়ায় স্বস্থির নিঃশ^াস ফেলছে হাওরের জনগণ।

ড্রেজিং এর মাটি ড্রেজডম্যাটেরিয়াল নীতি মালা ও উপজেলা ড্রেজড মেটারিয়াল কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিকটস্থ মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান, স্কুল, খেলার মাঠ ও বসতবাড়ির পাশে নিচু জায়গায়  বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে নদী খননের পাশাপাশি এলাকা বাসীর বসত ভিটা উঁচু করাসহ এবং রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন হচ্ছে। বন্যার সময় গবাদি পশুসহ মানুষের আশ্রয় গ্রহণের সুযোগ তৈরির পাশাপশি উন্নয়ন হচ্ছে এলাকাবাসীর জীবন যাত্রার মান।

বাহাদুরপুর এলাকার বাসিন্দা ও কৃষক দল নেতা শফিউল্লাহ ভূইঁয়া বলেন, ড্রেজিং এর ফলে নদীতে শুস্ক মৌসুমে নৌযান চলাচলের পাশাপাশি হাওরে কৃষি জমিতে সেচের সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। এই ড্রেজিং এর মাটি দিয়ে বিনামূল্যে এলাকার বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট, খেলার মাঠ ভরাট করার ফলে আমরা আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ। এলাকাবাসীর পক্ষ হতে সরকার ও  বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

বাঙালপাড়া ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার ও কুরেরপাড় এলাকার বাসিন্দা খসরু মিয়া এ প্রতিনিধিকে জানান, এই ড্রেজিং এর ফলে নদীটি আবারও প্রাণ ফিরে পাবে। সেচ ও নৌ-চলাচলের সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। সরকারি কর্মকর্তাগণ সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সহিত পরিশ্রম করে ড্রেজিং এর পাশাপাশি এলাকার  উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। অথচ একটা দুষ্টচক্র উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে সংবাদ সম্মেলন করে, নিউজ করে সরকারি কাজে অসহযোগিতা করছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অভিজিৎ সরকার মুঠোফোনে এ প্রতিনিধিকে জানান, ধলেশ্বরী কৃষি অধ্যুষিত অষ্টগ্রামের প্রাণ। নদীটি ভরাট হওয়ার ফলে দীর্ঘদিন ধরে কৃষি জমিতে সেচ কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। যথাসময়ে সফল ভাবে এ নদী খনন সম্ভব হলে হাওরের প্রায় ৫০০ একর জমি প্রাণ ফিরে পাবে জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান এ প্রতিনিধিকে জানান, সরকারি নিয়ম নীতি মেনেই নদী খননের কাজ চলছে। তিনি বলেন, আগামী জুন মাস পর্যন্ত এ ডেজিং চলবে। এ স্বল্প মধ্যেই আমাদের খনন কাজ শেষ করতে হবে। তাই তিনি নদী খননে সকলকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান।

বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) জাবের মজুমদার জানান, ধলেশ্বরী নদীর নাব্যতা উন্নয়নের জন্য সরকারি নিয়ম নীতি মেনে খনন  কাজ করা হচ্ছে এবং প্রকল্পের কাজটি চলতি অর্থ বছরেই শেষ করতে হবে। উক্ত নদীর খনন কাজ সম্পন্ন হলে সকল ধরনের নৌযান চলাচলসহ কৃষি ও মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে ব্যপক ভূমিকা রাখবে।  তিনি নির্দিষ্ট  সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ ADMIN

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
notebook

পানছড়িতে সেনাবাহিনী ও ইউপিডিএফ (মূল) এর মধ্যে গুলিবিনিময়, অত্যাধুনিক অস্ত্র উদ্ধার।