মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার একমাত্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কমলগঞ্জ বহুমুখী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়। উপজেলার অন্যান্য এমপিও ভুক্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের তুলনায় এই বিদ্যাপীঠ'টি সকল সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত।
১৮৯১খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত "কমলগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়" আজকের কমলগঞ্জ মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। ১৭ জন শিক্ষকের স্থলে মাত্র ১২ জন শিক্ষক নিয়ে কোনমতে টানাপূড়ণ করে চলছেন বলে জানান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জনাব, তাজউদ্দিন আহমেদ। একজন শিক্ষক মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন আর প্রতিদিনই দু'এক জন শিক্ষক কোন না কোন অজুহাতে ছুটিতে থাকেন। যারা (শিক্ষক) উপস্থিত থেকে ক্লাস করান, কোন কোন শিক্ষকের ৪থেকে ৫টি ক্লাসও নিতে হয় শিক্ষকদের পদ শূন্যতা থাকার কারণে। একজন মৌলানা শিক্ষকের মৃত্যুর পর সেই শূন্যস্থান এখনো পূরণ হয়নি, আসকর আলী পিয়নের অবসরে হওয়ার পর সেই শূন্যস্থানে এখনও কাউকে নিয়োগ দেওয়া যায়নি, একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী সুনিয়ার পক্ষে স্কুলের বিশাল বারান্দা, বিল্ডিং এর নিচতলা থেকে চারতালা পর্যন্ত ঝাড়ু দেওয়া পরিস্কার করা সম্ভব হয় না, তাই ময়লা ধুলোবালি স্কুলে লেগেই থাকে দিনের পর দিন।
স্কুল মাঠের পশ্চিম পাশের সীমানা প্রাচীর নিয়ে প্রতিবেশী আজাদ মিয়া বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষক সহ স্কুল কমিটির উপর মামলা করেছেন অনেক দিন , দীর্ঘদিন হয় মামলা বিচারাধীন, যার জন্য মাঠের পশ্চিম ও স্কুলের উত্তর দিকে সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা ঝুলে আছে। সন্ধ্যার পর স্কুল সীমানার ভিতর চলে নানান আড্ডা এবং কখনও কখনও নেশাখোরদের আনাগোনয় লজ্জিত হয় স্বনামধন্য এই বিদ্যাপিঠ।
রাতের আধারে ক্লাস রুমের ফ্যান খুলে নিয়ে বিভিন্ন ভাঙ্গারি দোকানে বিক্রি করতে গিয়ে দোকানীর ফোন পেয়ে টনক নড়েছে কর্তৃপক্ষের। কখনো ল্যাপটপ কখনো প্রজেক্টর পাওয়া যাচ্ছেনা প্রশিক্ষণ রোম থেকে। স্কুলের নারিকেল থেকে শুরু করে মৌচাকের মৌ পর্যন্ত রক্ষা পাচ্ছেনা চুরের হাত থেকে।
স্বনামধন্য বেশ কয়েক জন শিক্ষকদের মৃত্যুবরণ এবং কয়েক জন শিক্ষক অবসরে যাবার পর এই স্কুলের পড়া লেখার মান নিয়ে অনেক অভিভাবকই অসন্তুষ্ট। সর্বশেষ পবিত্র কুমার শিক্ষকের মৃত্যুর পর, স্কুলের শিক্ষকদের সংকট আরো প্রখট হয়ে দাড়িয়েছে এবং এই শূন্যস্থানে নিয়োগ দেওয়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পক্ষে সম্ভব নয়।তিনি জানালেন পদ সৃষ্ট করার পর সেই পদে নিয়োগ নিতে হবে এবং সেটা করবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, আর ততদিন শূন্য পদ নিয়েই বসে থাকতে হবে। অস্থায়ী নিয়োগও অসম্ভব
সরকারিকরণ করার পর যে সুবিধা স্কুল পেয়েছে সেটি হচ্ছে, নির্দিষ্ট পরিমাণ ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি এবং তাদের বিনা বেতনে পড়ালেখা, ছাত্র ছাত্রীদের মাসিক ১০থেকে ১৫ টাকা নাম মাত্র বেতন প্রদান করতে হয়, ভর্তি ও সেশন ফি ১০০০ থেকে ১৭০০ টাকা করে প্রদান করতে হয়। আর শিক্ষকরা পাচ্ছেন সরকারি স্কেলে বেতন। এ বছর বইয়ের তীব্র সংকট জানালেন প্রধান শিক্ষক সঠিকভাবে বই বিতরণ করতে পারছেন না, এরকম নানান দৈন্যদশা নিয়ে চলছে কমলগঞ্জ মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়।