ক্ষুধার্ত কবি
(এক কষ্টের অনু গল্প)
-আমিনুল হক নজরুল
এক ভোরবেলা, শীতের কুয়াশা তখনও শহরের গায়ে জড়ানো। এক কোণায় পুরোনো চাদর মুড়ে বসে আছে একজন মানুষ—চোখে ক্লান্তি, মুখে অনাহারের দাগ। তাঁর হাতে একখানা নোটবুক, কলমটা শেষ হয়েও যায়নি—হৃদয়ের কালি দিয়ে লিখে চলেছে সে।
তিনি একজন কবি, নাম আনিসুল। কারো কাছে বিখ্যাত নন, কিন্তু নিজের কাছে—একজন বিপ্লবী। শব্দের ভেতরই খুঁজে নেন আশ্রয়। কিন্তু আজ তিনদিন হলো কিছু খায়নি। ক্ষুধা, ঠান্ডা আর অবহেলা তার কবিতার ভাষা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হঠাৎ এক পথচারী এসে জিজ্ঞেস করলো,
— “চাচা, আপনি এখানে বসে কী করছেন?”
কবি মৃদু হেসে বললেন,
— “একটা কবিতা লিখছি ক্ষুধার ওপর।”
— “কী পেলেন এই কবিতায়?”
— “পেটভরা ভাত না পেলেও কিছু সহানুভূতি পেয়েছি, নিজের কাছে। আর এটুকুই বেঁচে থাকার প্রেরণা।”
লোকটা চলে গেল। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে একটা ডিমভাজা, রুটি আর চা এগিয়ে দিল। কবির চোখ ভিজে উঠলো। খাবারটুকু হাতে নিয়ে বললেন,
— “এই কবিতাটার নাম দিলাম ‘মানবতা’।”
ছোট গল্প হলেও, জীবন অনেক সময় এমনই—কষ্টের গভীরে জন্ম নেয় মমতার আলো।