হাওরের উন্নয়নে বিশেষ মনোযোগ প্রয়োজন
লায়ন মুহাম্মদ কামাল হোসেন (বিশেষ প্রতিনিধি):
সমগ্র হাওরাঞ্চল, বিশেষ করে নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর, ভলাকুট, চাতলপাড়, কুন্ডাসহ পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন ও গ্রামগুলোর অধিকাংশ মানুষ আজ দারিদ্র্যের শিকার। জমিজমার ভাগ-বাটোয়ারা হতে হতে অনেকে সর্বস্ব হারিয়ে অন্তত অর্ধেক মানুষ গরিব ও অতি গরিব শ্রেণিতে নেমে গেছেন। ফলে অভাব-অনটন তাদের নিত্যসঙ্গী।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ—ঝড়, বন্যা, অতিবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি বা জলোচ্ছ্বাস—এসে যখন সবকিছু আরও নষ্ট করে দেয়, তখন শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে কেউ কেউ শহরমুখী হয় শুধুই পেটের দায়ে। অনেকে স্ত্রী-সন্তান ফেলে রেখে ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের বস্তি, খাল-বিল, রেললাইন সংলগ্ন অস্বাস্থ্যকর এলাকায় মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হন। সেখানেও তাদের জীবন চলে অমানবিক কষ্টের মধ্য দিয়ে।
কাজের সন্ধানে গিয়ে তারা কেউ হন দিনমজুর, কেউ রিকশা-ভ্যানচালক, কেউ বা ইটভাঙা বা ঝি-চাকরানীর মতো পরিশ্রমী কিন্তু অবহেলিত পেশায় নিয়োজিত। অভাব-অনটনের ভেতর থেকেও তারা অসৎ পথে না গিয়ে হালাল উপার্জনের সংগ্রামে লড়াই করে যাচ্ছেন। এই শ্রমজীবী সংগ্রামী মানুষদের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই।
এখন জরুরি প্রয়োজন, এলাকার উন্নয়নে নিয়োজিত কর্তৃপক্ষ ও জনপ্রতিনিধিরা আন্তরিক হয়ে জনগণের পাশে দাঁড়াবেন। অল্প সম্পদ দিয়েই যদি পরিকল্পিত ও বাস্তবায়নযোগ্য উদ্যোগ নেওয়া যায়, তাহলে হাওরবাসীর দুঃখ-দুর্দশা অনেকটাই লাঘব করা সম্ভব।
আমরা যদি এখনো উদ্যোগ না নেই, তবে তা আমাদের নিজেদের জন্য হবে একপ্রকার “জাতিবিনাশী আত্মঘাতী পদক্ষেপ”। জনগণকে রঙিন স্বপ্ন দেখিয়ে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে তার দায় আমাদেরই বহন করতে হবে। তাই হীনস্বার্থ, দুর্নীতি ও অদূরদর্শিতা থেকে বের হয়ে আসুন। প্রদত্ত প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নে আন্তরিক হোন।
তাহলেই আগামী দিনে এলাকার উন্নয়নে নিবেদিতপ্রাণ প্রতিনিধি হিসেবে মানুষের দোয়া ও সমর্থন লাভ করা সম্ভব হবে।