নিজস্ব প্রতিনিধি : সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সচিবালয় অভিমুখী পদযাত্রায় বাধা দিয়েছে পুলিশ। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান নিক্ষেপ করেছে। তবে আন্দোলনকারীরা রাস্তায় অবস্থান অব্যাহত রেখেছেন।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ৩টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষকরা ঢাকার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু করেন। সহস্রাধিক আন্দোলনকারী শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি হয়ে হাইকোর্ট মাজার রোডের দিকে অগ্রসর হন এবং পরে সচিবালয়ের দিকে যাত্রা করেন। এ সময় পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাদের বাধা দেয়। বিকেল ৪টার কিছু আগে পুলিশ জলকামান নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।
১১ দিনের টানা অবস্থান কর্মসূচি:
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা টানা ১১ দিন ধরে এই কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন এবং চাকরিতে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বেন না। তাদের অভিযোগ, যৌক্তিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে বারবার পুলিশ বলপ্রয়োগ করছে।
তারা আরও জানান, এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশ আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ব্যবহার করেছিল। ওই দিন পুলিশ লাঠিপেটাও করে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবারও শাহবাগে পুলিশ জলকামান নিক্ষেপ ও লাঠিপেটার মাধ্যমে তাদের আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করে।
তৃতীয় ধাপের নিয়োগে অনিশ্চয়তা
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য তিন ধাপে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হলেও তৃতীয় ধাপের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে গত বছরের ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশ করা হয়, যেখানে ৬ হাজার ৫৩১ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। তবে কিছু নিয়োগবঞ্চিত প্রার্থীর রিটের কারণে নিয়োগ কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। পরে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তাদের নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে রায় দেন।
পূর্ববর্তী আন্দোলন ও পুলিশের হস্তক্ষেপ
এর আগে, গত বুধবার রাজধানীর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে আন্দোলন করেন সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগবঞ্চিত ব্যক্তিরা। এরপর বৃহস্পতিবার শাহবাগে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে তাদের সরিয়ে দেয়।
আন্দোলনকারীদের দাবি ও প্রতিক্রিয়া
নিয়োগপ্রত্যাশী শিক্ষকদের দাবি, তারা দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগের জন্য অপেক্ষা করছেন। অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়ে দ্রুত তাদের নিয়োগ কার্যক্রম বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।
তারা আজকের সাংবাদকে আরও বলেন, দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পরও যদি তাদের দাবি মানা না হয়, তাহলে আরও কঠোর কর্মসূচির দিকে যেতে বাধ্য হবেন।