আমিনুল হক,নিজস্ব প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে টানা দু’দিনের ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অনেক মানুষ। দুর্বিসহ জীবন পার করছে অনেকে। ঢলের স্রোতে ভেঙে গেছে বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ সড়ক। ক্ষতি হয়েছে আমন ও সবজি ক্ষেতের। অনেক মৎস্য প্রকল্প থেকে মাছ পানিতে ভেসে গেছে।
জানা গিয়েছে, টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে মিরসরাই উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, বারইয়ারহাট পৌরসভা, মিরসরাই পৌরসভার নিম্নাঞ্চল, জোরারগঞ্জ, ইছাখালী, কাটাছরা, দুর্গাপুর, মিঠানালা, খৈয়াছড়া, ওসমানপুর, সরকারতালুক, খিলমুরারী ও ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের মধ্যম ওয়াহেদপুর, দক্ষিণ ওয়াহেদপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।সেখানে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে জোরারগঞ্জ-মুহুরীপ্রজেক্ট ও জোরারগঞ্জ-আবুরহাট সড়ক, বড়দারোগাহাট-কমরআলী সড়ক।
মিরসরাই পৌরসভার মধ্যম মঘাদিয়া এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘টানা দুদিনের ভারি বর্ষন ও পাহাড়ি ঢলে আমাদের এলাকার সবকিছু ডুবে গেছে। মানুষের বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে রান্নাবান্না করতে পারছেনা। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলে পাহাড়ি ঢলে পুরো এলাকা ডুবে যায়।’
সৈদালী এলাকার মোহাম্মদ মাসুদ জানান, ‘মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠা ও খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করার কারণে সামান্য বৃষ্টিতে সৈদালী ডুবে থাকে।পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় আমাদের দুর্ভোগের শেষ থাকেনা।
মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার বাসিন্দা সাহাব উদ্দিন জানান, পাহাড়ি ঢলে আমাদের হাবিব উল্লাহ ভূঁইয়া সড়ক ছরায় পূর্বপাশে ভেঙ্গে গেছে। বিশেষ করে হামিদ আলী ভূঁইয়া জামে মসজিদ থেকে রেল লাইন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার মিটার সড়কে ১৫দিন আগে সংস্কার কাজ করা হয়েছে।
উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামের কৃষক জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আমার প্রায় এক একর জমির রোপা আমন তলিয়ে গেছে। এতে আমার বিশাল ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হতে হবে।
মৎস্য চাষী ইকবাল হোসেন জানান, ইছাখালীতে কয়েকটি মৎস্য প্রকল্প থেকে পানির সাথে মাছ ভেসে গেছে। তবে বৃষ্টি আর না বাড়লে তেমন ক্ষতি আশঙ্কা নেই।
মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় জানিয়েছেন, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে রোপা আমন ডুবে গেছে। এছাড়া সবজির কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে বৃষ্টি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এখনো ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, মৎস্য প্রকল্পগুলোর পাড় নিচু হওয়ায় দুইদিন বৃষ্টি হলেই পানি বাইরে চলে যায়। টানা বৃষ্টি হওয়ায় মৎস্যচাষীদের ক্ষতি হতে পারে। তবে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেলে ক্ষতির পরিমাণ কমে যাবে।