জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ একমাত্র সন্তানের ছবি বুকে নিয়ে আজও চোখের জলে ভাসছেন তার বাবা-মা
মো. নজরুল ইসলাম:
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে একমাত্র সন্তান তনয় চন্দ্র দাসকে হারিয়ে পুত্র শোকে আজও চোখের চলে ভাসছেন তার বাবা-মা। তনয় চন্দ্র দাস ২০২৪ সলের ২০ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গাজীপুর বোর্ড বাজার এলাকায় পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। তিনি কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামের বাঙ্গালপাড়া ইউনিয়নের ভাটিনগর গ্রামের বাসিন্দা হরিকান্ত চন্দ্র দাস ও সবিতা রানী দাস দম্পতির একমাত্র সন্তান। তনয় দাস কুলিয়ারচর ডিগ্রী কলেজের একাদ্বশ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন।
প্রতিবেশীরা জানায়, তনয় তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তার বাবা মায়ের বিয়ের ৮বছর পর তনয়ের জন্ম। এরপর আর কোন সন্তান হয়নি তাদের। একমাত্র সন্তান তনয়কে হারিয়ে তার বাবা-মা আজ দিশেহারা। ছেলের ছবি বুকে নিয়ে চোখের জলে বুক ভাসিয়ে কাটছে তাদের দিন।
প্রত্যন্ত হাওরে থৈ থৈ পানিতে জাহাজের মতো ভাসছে ছোট একটি গ্রাম ’ভাটিনগর’। শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে সেই গ্রামে গেলে ছোট্ট একটি ঘরে তনয়ের বাবা-মায়ের সাথে দেখা হয়। তনয়ের ছবি হাতে নিয়ে অশ্রু সজল চোখে এই প্রতিবেদকের সাথে কথা বলেন তারা। তনয়ের মা সবিতা রানীদাস চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, ছেলের মৃত্যুর পর যদিও সরকারী ও বেসরকারী ভাবে কিছু সহযোগীতা পেয়েছি তবুও ছেলের শূণ্যতা আজও আমাদের তাড়া করে ফেরে। আজও শুনতে পাই পেছন থেকে আমার ছেলে মা বলে ডাকছে। ছেলের শোকে এখনো চোখে ঘুম আসেনা। চোখ বুজলেই স্বপ্নে ছেলেকে দেখে চিৎকার দিয়ে উঠি। কান্না জড়িত কন্ঠে ছেলের ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, আমি আপনাদের কাছে কিচ্ছু চাইনা, আপনারা আমার ছেলেকে আমার বুকে ফেরত এনে দেন।
শহীদ তনয়ের বাবা হরিকান্ত চন্দ্র দাস এ প্রতিনিধিকে জানান, আমার ছেলে কখনো কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলনা। তবু আমার ছেলেকে নির্মম ভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের আশা ছিল ছেলে বড় হয়ে মানুষের মতো মানুষ হবে। কিন্তু তা আর হলোনা। তিনি এই গণহত্যার সাথে জড়িত সকলের দ্রুত বিচার দাবী করেন।