বরগুনার পাথরঘাটায় সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে বাধা দেয়ায় বরগুনা ও পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে বরিশাল সাইবার সিকিউরিটি আইনে মামলা দায়ের করেছে কথিত সাংবাদিক মতিউর রহমান।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে ওই মামলা করেন দৈনিক মফস্বল বার্তা পত্রিকার বরগুনা জেলা প্রতিনিধি মতিউর রহমান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বেঞ্চ সহকারী নাজমুল হাসান।
মামলার বিবাদীরা হলেন, বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি সোহেল হাফিজ, পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রথম আলোর পাথরঘাটা প্রতিনিধি আমিন সোহেল, পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও যুগান্তরের পাথরঘাটা প্রতিনিধি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী, জিয়াউল ইসলাম, মাসুম বিল্লাহ ও জাকির হোসেন জুয়েল।
জানা যায়, গত ৩০ জানুয়ারি পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে অভিযোগ আসে বরগুনা থেকে একদল সাংবাদিক পরিচয়ে পাথরঘাটার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে পিকনিকে নামে চাঁদা আদায় করছে। চাঁদা দিতে অপারগতা জানলে তাদেরকে হুমকিও দিচ্ছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি সম্পাদক সহ একটি প্রতিনিধি দল ডা. বশির আহমেদ এর চেম্বারে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পায়। সেখানে দৈনিক মফস্বল বার্তা পত্রিকার বরগুনা জেলা প্রতিনিধি পরিচয়ে কথিত সাংবাদিক মতিউর রহমানকে পাওয়া যায়। তখন মতিউর রহমান বিভিন্ন স্থানে গিয়ে চাঁদাবাজির দায় স্বীকার করে নিজের দোষ স্বীকার করেন।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি সোহেল হাফিজকে জানান, ঘটনাস্থলে বসে বিষয়টি তাৎক্ষণিক পাথরঘাটার সাংবাদিকরা আমাকে জানিয়েছে।আমাদের কাছেও তাদের বিরুদ্ধে এমন একাধিক অভিযোগ আছে। এদের কারনে সবাই অতিষ্ঠ। কথিত ঐ সাংবাদিককের বিরুদ্ধে আমি তখনি আইনের কাছে তুলে দিতে বলেছিলাম।
এদিকে বরগুনা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সাইবার আইনের মামলার আসামী করায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠনের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। পিকনিকের নামে চাঁদাবাজি করায় পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সাংবাদিকরা তাকে এমন অপরাধ থাকতে নিবৃত করার আহবান জানান। এই কারণে বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি সহ পাথরঘাটার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করা দুঃখজনক।
এবিষয়ে পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ঘটনার দিন কতিথ এক সাংবাদিক চাঁদাবাজি করছে এমন অভিযোগ পেয়ে তাকে নিয়ে আমার কাছে উপস্থিত করা হয়। এসময় তার কাছে একটি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের বুম সহ তিনি উপস্থিত হন। তিনি নিজেকে ঐ টিভি চ্যানেলের কোন সাংবাদিক নন বলে জানান। এছাড়া তিনি যে মিডিয়ায় কাজ করে তার কোন মেয়াদ নেই। আমি তাকে চায়ের নিমন্ত্রণ জানাই এবং পাথরঘাটা চাঁদা না তোলার আহবান জানাই। তাকে কোন রকমের হেনস্তা করা হয়নি।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আ্যডভোকেট গোলাম মোস্তফা এবিষয়ে বলেন, বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি আ্যডভোকেট সোহেল হাফিজ সহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সাইবার আইনে মামলা করার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। তিনি আরো বলেন কতিপয় নামধারী সাংবাদিক বছরের এই সময়টাতে পিকনিকের নামে চাঁদাবাজি করে সাংবাদিক পেশাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাদের বিরুদ্ধে উল্টো তিনি আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সাবেক সদস্য ও ভোরের কাগজের সাবেক প্রতিনিধি জাকির হোসেন জুয়েল বলেন, সাংবাদিকের নামে বরগুনায় চাঁদাবাজি করে সাংবাদিক সমাজকে ধ্বংস করছে কতিপয় নামধারী সাংবাদিক। এরকম একটি প্রতিবাদ ভিডিও দেখে আমার টাইম লাইনে শেয়ার করেছি। একারণে আমাকে আসামি করা হয়েছে। আমি এধরনের হলুদ সাংবাদিকতার নামে চাঁদাবাজি করছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।