স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর বেসরকারি ইমপালস হাসপাতালের পরিচালক ডা. উম্মে সালমা মুন্নীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ আশরাফুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে। গত ৫ই সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) বোর্ড সভায় প্রকাশ্যে ঐ নারী পরিচালককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠে। এদিকে ঐ হামলার আশঙ্কাই তেজগাঁও থানায় সাধারণ ডায়েরী (জিডিও) করেছিলেন ভুক্তভোগী ডা. মুন্নী।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল অলক্রাইম্সডট টিভি (https://allcrimes.tv/2317) সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ডাক্তার উম্মে সালমা মুন্নী জানান, গত ৫ই সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) বোর্ড সভায় তার ওপর হামলা করেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ আশরাফুল ইসলাম খান।
একটি হামলার ঘটনা বর্ণনা করে ডাক্তার মুন্নী বলেন, ইমপালস হাসপাতালের মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। গত শুক্রবার বিকেলে হাসপাতালের বোর্ড সভা চলাকালে ব্যবস্থাপনা পরিচালক খালেদা ইয়াসমিনের পক্ষে আশরাফুল ইসলাম খান ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ঘুষি মারেন। পরে তিনি ৯৯৯-এ ফোন করলে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা থেকে পুলিশ আসে।
ঘটনার সময় উপস্থিত হাসপাতালের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. অধ্যাপক জাহীর আল-আমিন বলেন, “আমি আমার বক্তব্য নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। পরে দেখি অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. উম্মে সালমা মুন্নীকে অশালীন আচরণ করে তার দিকে তেড়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় ডা. উম্মে সালমা নিজেকে রক্ষায় আশরাফুলকে হাত দিয়ে সরিয়ে দেন। তখন আশরাফুল ইসলাম তাকে ঘুষি মারেন।”
এর আগে ৫ই সেপ্টেম্বর সকালে ইমপালস হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খালেদা ইয়াসমিনসহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ডা. উম্মে সালমা মুন্নী। জিডি নং: ২৭৪।
জিডিতে খালেদা ইয়াসমিন ছাড়াও নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রফেসর ডা. এম এম জহুরুল আলম খান, ডা. ওয়াদুদ আলী খান, মো. ওমর ফারুক, মো. আশরাফুল ইসলাম খান ও ইঞ্জিনিয়ার মো. মোজাফফর হোসেনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
ডা. উম্মে সালমা মুন্নী অভিযোগ করেছেন, বিবাদীদের সঙ্গে হাসপাতালের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য চলছিল। এরই জের ধরে গত ৬ই আগস্ট সন্ধ্যা ৬টা ২৮ মিনিটে খালেদা ইয়াসমিন তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে কল করেন। তিনি কলটি রিসিভ করতে না পারায় ৬টা ৩১ মিনিটে খালেদার নাম্বারে ফোন দিলে তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
এছাড়া ১৪ই আগস্ট ইমপালস হাসপাতালের অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে তাকেসহ ডা. প্রফেসর নিশাত বেগম, ডা. খাদিজা ঝুমা, ডা. মোহসিন কাউসার এবং মৌসুমী খান নামের চার পরিচালককে রিমুভ করা হয়।
জিডিতে আরও উল্লেখ আছে, ৫ই সেপ্টেম্বর ইমপালস হাসপাতালের বোর্ড সভা আহ্বান করা হয়েছে। ওই সভায় তিনি ও তার পক্ষের শেয়ারহোল্ডাররা হাজির হলে অভিযুক্তরা তাদের ক্ষতি করতে পারে—এমন আশঙ্কা করেছিলেন তিনি। অবশেষে তার উপর হামলার মধ্য দিয়ে সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে বলে দাবি করেন ডা. উম্মে সালমা মুন্নী।
তবে জিডির তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার উপ-পরিদর্শক মো. আবু ইসাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি বলে অনলাইন গণমাধ্যমটি জানায়।
এ বিষয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, অভিযোগকারীর জিডির বিষয়ে তদন্ত চলছে। তবে নারী ডাক্তার উম্মে ছালমা মুন্নীর উপর হামলার বিষয়ে তিনি বলেন,এই বিষয়ে তো জিডি করা হয়নি।
অভিযুক্ত সাবেক জেলা জজ আশরাফুল ইসলামের বক্তব্য নিতে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এর আগে তার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে বার্তা পাঠিয়ে বক্তব্য চাওয়া হলেও কোনো উত্তর মেলেনি।
এদিকে বোর্ড সভায় ঘটে যাওয়া ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশকে দেওয়া হয়েছে দাবি করে অভিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক খালেদা ইয়াসমিন রবিবার রাতে বলেন, তদন্তাধীন বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।