নিজস্ব প্রতিবেদক:
আসন্ন দুর্গাপূজা ঘিরে যশোর সীমান্তপথে ভারতে স্বর্ণ পাচার বেড়েছে। উৎসবকে সামনে রেখে ভারতের বাজারে স্বর্ণালঙ্কারের চাহিদা বাড়ায় পাচারকারীরা বেনাপোল রুটকে বেশি ব্যবহার করছে। চোরাকারবারিরা কখনো সীমান্তপথ, আবার কখনো আমদানি-রফতানির পণ্যবাহী যানবাহন কিংবা পাসপোর্টধারীদের মাধ্যমে স্বর্ণ পাচারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত কেবল ৪৯ ব্যাটালিয়নের অভিযানে ১৫ কেজি ৫০৪ গ্রাম স্বর্ণ জব্দ হয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য ২৩ কোটি ১৬ লাখ ৩৮ হাজার ২৫৩ টাকা। এসময় পাচারের সঙ্গে জড়িত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে স্বর্ণ বহনকারীরা ধরা পড়লেও বরাবরই গডফাদাররা থেকে যাচ্ছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। বিজিবি বলছে, মূল হোতাদের চিহ্নিত করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সীমান্ত সূত্র জানায়, দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বিমানে আনা হয় স্বর্ণের চালান। পরে তা ঢাকা থেকে বাস-ট্রেনে করে যশোরে আনা হয়। স্থানীয় এজেন্টদের হাতে পৌঁছানোর পর সীমান্তের নির্দিষ্ট স্থানে তা হাতবদল হয়ে ভারতে পাচার হয়।
মানবাধিকার সংগঠন ‘রাইটস যশোর’-এর নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, দুর্গাপূজার আগে স্বর্ণ পাচার বাড়ে। স্বর্ণ যাচ্ছে আর বিনিময়ে আসছে মাদকসহ নানা নেশাজাত দ্রব্য। পাচারকারীরা ধরা পড়লেও মূল হোতাদের ধরতে প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম জানান, আগে সীমান্তে রাজস্ব ফাঁকির চোরাচালান বেশি হলেও বর্তমানে বৈধ পণ্যবাহী ট্রাক ও পাসপোর্টধারীদের মাধ্যমেই স্বর্ণ পাচার হচ্ছে। এ কাজে দুই দেশের ট্রাকচালক ও কিছু যাত্রী জড়িয়ে পড়ছে।
বেনাপোল সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা রুবেল হোসেন বলেন, স্বর্ণ পাচার বেড়ে যাওয়ায় সীমান্ত অপরাধীদের আনাগোনা বেড়েছে। এতে স্থানীয়রা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
যশোর ৪৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, স্বর্ণ পাচারসহ সব ধরনের অপরাধ দমন করতে বিজিবি আন্তরিকভাবে কাজ করছে। আট মাসে ১৫ কেজি ৫০৪ গ্রাম স্বর্ণ ও ১৭ জন চোরাকারবারিকে আটক করা হয়েছে। পাচারের সঙ্গে জড়িত মূল হোতাদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।