হুমায়ন কবির মিরাজ, বেনাপোল:
যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ফের জোরেশোরে শুরু হয়েছে ভারতীয় চাল আমদানি। মাত্র দুই সপ্তাহে এই বন্দর দিয়ে ৭১টি ট্রাকে ২ হাজার ৪৮৫ টন চাল প্রবেশ করেছে। সরকারি সিদ্ধান্তে দীর্ঘ বিরতির পর চাল আমদানি চালু হওয়ায় বন্দরে আবারও কর্মচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। তবে ভোক্তারা সামান্য স্বস্তি পেলেও বাজারে এখনো উল্লেখযোগ্য দামের পরিবর্তন হয়নি।
বন্দর সূত্র জানায়, ইরি-বোরো মৌসুম শেষে দেশে চালের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত ১২ আগস্ট সরকার আমদানিকারকদের বরাদ্দ ইস্যু করে। এর পরপরই ২১ আগস্ট থেকে ভারতীয় ট্রাকে চাল আসা শুরু হয়। বেনাপোল দিয়ে চাল আমদানি করছে মেসার্স উষা ট্রেডিং, মৌসুমী ট্রেডার্স, হাজী মুছা করিম অ্যান্ড সন্স, গণী এন্টারপ্রাইজ ও প্রিয়ম এন্টারপ্রাইজ।
চাল আমদানিকারক আব্দুস সামাদ (গণী এন্টারপ্রাইজ) বলেন, ভারত থেকে চাল আসায় বাজারে ইতোমধ্যে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। সরবরাহ অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমবে। তবে অন্য এক আমদানিকারক শামীম আহমেদ জানান, ভারতে আগেভাগেই দাম বাড়ানোয় আমদানিকারীরা লাভবান হচ্ছেন না। বর্তমানে সম্পা কাটারি চাল কেজি ৭০-৭১ টাকা, স্বর্ণা ৫২-৫৩ টাকা এবং আঠাশ ৫৫-৫৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বাজারেও সামান্য পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নাভারন বাজারের ব্যবসায়ী সুবহান আলী বলেন, এক সপ্তাহ আগে সম্পা কাটারি বিক্রি হয়েছে কেজি ৭২ টাকায়, এখন কেজি ৭১ টাকায় নামানো হয়েছে। বাগআঁচড়া বাজারের দিনমজুর শহিদুল ইসলাম জানান, চালের দাম কেজিতে দেড় টাকা পর্যন্ত কমেছে, তবে আশা ছিল আরও কমবে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান দা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, চার মাস পর চাল আমদানি শুরু হওয়ায় বন্দরে আবারও কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। অন্যদিকে বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবীর তরফদার জানান, ২১ আগস্ট থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিনই ট্রাকভর্তি চাল ঢুকছে এবং দ্রুত ছাড় করানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের ১৫ এপ্রিলের পর এই প্রথম বেনাপোল দিয়ে চাল আমদানি হলো।
ভারত থেকে চাল আসায় বাজারে কিছুটা স্বস্তি মিললেও এখনো প্রত্যাশিতভাবে দাম কমেনি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমে আসবে। তবে ভোক্তাদের আশা সরকারের এই উদ্যোগে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে এবং সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্য।