সম্মেলনে বক্তরা বলেন,বর্তমান অস্থির ও সংকটময় সময়ে ইসলামি দলগুলোর জন্য হক্কানী আলেমদের দিকনির্দেশনা অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, ইসলামি দলগুলো যদি দ্বীনদার, নিরপেক্ষ ও অভিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শ অনুযায়ী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তবে ইসলাম, মুসলমান, দেশ ও জাতির প্রকৃত কল্যাণ নিহিত থাকবে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক। প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন জমিয়তুল মোদারর্ছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশী, পটিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা আবু তাহের নদবী, মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী, দারুল মাআরিফ চট্টগ্রামের মুহতামীম মাওলানা ফুরকানুল্লাহ নদবী, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মাওলানা আরশাদ রাহমানী, মাওলানা এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী, মাওলানা আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী, মুফতি কেফায়েতুল্লাহ হাটহাজারী, যশোর রেলওয়ে মাদরাসার মুহতামীম মাও. আনোয়ারুল করীম যশোরী, রংপুর জুম্মাপাড়া মাদরাসার নায়েবে মুহতামীম, মাও. ইউনুস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মহাসচিব মাও. জালালুদ্দিন আহমদ, খেলাফতে মজলিশের নায়েবে আমীর, মাও. আহমদ আলী, নেজামে পার্টির মহাসচিব : মাও. আজিজুল হক ইসলামাবাদী,হাটহাজারী মাদরাসার সিনিয়র মহাদ্দীস লেখক ও গবেষক, সাংবাদিক মাও. আশরাফ আলী নিজামপুরী,বিশিষ্ট লেখক ও কলামিষ্ট মাও. জয়নাল আবেদীন,মাও. খালেদ সাইফুল্লাহ আয়ুবী, বিশিষ্ট লেখক মরুমি কবি মুসা আল হাফিজ সহ দেশবরেণ্য আলেমরা।
দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মহাসচিব, মাও. মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার, মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ সাদী, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, মাওলানা শেখ মুজিবুর রহমান, মুফতি মুজিবুর রহমান, মাওলানা মাসউদুল করিম, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক, মাও. লোকমান মাযহারী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, মাও. নাছির উদ্দীন খাঁন, প্রমুখ।
উক্ত সম্মেলনে দেশের চলমান রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি বাতিল ও প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলকসহ ১৫ দফা প্রস্তাবনা গৃহীত হয়। প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
সম্মেলনে দেশের চলমান রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা শেষে ১৫ দফা প্রস্তাবনা গৃহীত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
১. জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।
২. জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন।
৩. প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল।
৪. নির্ধারিত সময়ে অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করা।
৫. শরিয়াভিত্তিক নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং বিতর্কিত নারী কমিশনের সুপারিশ বাতিল।
৬. সমকামিতা ও ট্রান্সজেন্ডার সংস্কৃতিসহ ইসলামবিরোধী কার্যক্রম বন্ধ।
৭. পিলখানা, শাপলা, মোদীবিরোধী আন্দোলন ও ২০২৪ সালের গণহত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্ন।
৮. ধর্ম অবমাননা রোধে কঠোর আইন প্রণয়ন।
৯. অন্তর্বর্তী সরকারকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।
১০. গাজায় গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠায় জোরালো আন্তর্জাতিক ভূমিকা।
১১. পার্বত্য অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা দমন।
১২. কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা এবং মসজিদ-মাদ্রাসা দখলসহ সব অন্যায়-জুলুম বন্ধ।
১৩. মসজিদ দখল, চাঁদাবাজি ইত্যাদি রোধে কঠোর সরকারি ব্যবস্থা।
১৪. জমিয়তের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজীনগরীর হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার।
সম্মেলনের আহ্বান
নেতৃবৃন্দ বলেন, ইসলামি মূল্যবোধ, ন্যায়বিচার এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এসব দাবির বাস্তবায়ন অত্যাবশ্যক। এজন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।