কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার রামদী ইউনিয়নে সহকারী শিক্ষক দ্বারা সহকর্মী নারী শিক্ষিকাকে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তের নাম রামদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. এনামুল হক। আর ভুক্তভোগী বড়চর মোহাম্মদ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মিতালি চক্রবর্তী।
৩ সেপ্টেম্বর (বুধবার) দুপুরে মিতালি চক্রবর্তী নিজে বাদী হয়ে কুলিয়ারচর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ২ সেপ্টেম্বর সকালে আনুমানিক সাড়ে নয়টার দিকে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে সহকর্মী বিলকিস আক্তার সোমার সঙ্গে মিতালির বাকবিতণ্ডা হয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সোমা তার স্বামীকে খবর দেন এবং পরে এনামুল হকও ঘটনাস্থলে হাজির হন। অভিযোগ অনুযায়ী, রামদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রধান শিক্ষক ও অন্য সহকর্মীদের উপস্থিতিতেই মিতালিকে তারা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। একপর্যায়ে তার স্বামী শশাংক গোস্বামী চয়ন এগিয়ে এলে তাকেও মারধরের শিকার হতে হয়।
ঘটনার পর উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাটি প্রাথমিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা করেন। তবে মিতালির দাবি, মীমাংসার পরও তিনি নানা হুমকি-ধমকির মধ্যে আছেন এবং বর্তমানে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক এনামুল হক অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমার স্ত্রীর সঙ্গে মিতালির তর্ক হয়েছিল। পরে সবাই মিলে বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে। এখন যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন।”
এ বিষয়ে কুলিয়ারচর থানার ওসি (তদন্ত) খোকন চন্দ্র সরকার জানান, লিখিত অভিযোগ হাতে পেয়েছেন। তিনি বলেন, “অভিযোগটি তদন্ত করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদসহ সনাতন ধর্মাবলম্বী সংগঠনগুলো মিতালি চক্রবর্তীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে।
কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেফতাহুল হাসান বলেন, “বিষয়টি জানার পর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”