মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরে মানসিক যন্ত্রনা সইতে না পেরে ইতালি প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় দোষিদের বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহত সুমাইয়ার পরিবার। রোববার দুপুরে মাদারীপুর শহরের একটি সাংবাদিক অফিসে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় নিহত সুমাইয়ার মা রুমি বেগম অভিযোগ করে বলেন, বছরখানেক আগে সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের ভরুয়াপাড়া গ্রামের সরোয়ার হাওলাদারের ছেলে ইতালি প্রবাসী জহিরুল হাওলাদারের সাথে বিয়ে হয় রাজৈরের কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের নাসির হাওলাদারের মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের। বিয়ের পর স্ত্রীকে ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এতে বাধা দেয় জহিরুলের পরিবার। এ নিয়ে শুরু হয় পারিবারিক কলহ। একপর্যায়ে বিয়ের সময় দেয়া সুমাইয়ার স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ করে সুমাইয়াকে মানসিক নির্যাতন শুরু করে বলে অভিযোগ নির্যাতিতার পরিবারের। পরে বাবার চলে আসে সুমাইয়া। মঙ্গলবার রাতে খুঁটিনাটি বিষয়টি নিয়ে স্বামীর সাথে মোবাইল ফোনে আবারো ঝগড়া হয় সুমাইয়ার। এই মানসিক যন্ত্রনা সইতে না পেরে ফ্যানের সাথে ওড়না প্যাঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই গৃহবধু। পরে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। বুধবার সন্ধ্যায় মরদেহটি বাবার বাড়িতে দাফন করা হয়। এই ঘটনায় নিহত সুমাইয়ার স্বামী জহিরুল হাওলাদারসহ ৫ জনের নামে রাজৈর থানায় গত ৫ নভেম্বর মামলা করেন সুমাইয়ার বাবা নাসির হাওলাদার। এই ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে মামলার ঘটনা জানাজানি হলে জহিরুলের বাবা সরোয়ার হাওলাদার বাদী হয়ে ৬ নভেম্বর মাদারীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সুমাইয়ার বাবাসহ ৮ জনের নামে আরেকটি মামলা করেন। এতে ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে দোষিদের বিচার করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সুমাইয়ার পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত সুমাইয়ার বাবা নাসির হাওলাদার, মা রুমি বেগম, চাচা কালাম হাওলাদার, মামা হিরু তালুকদারসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে মাদারীপুরের রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ খান জানান, সুমাইয়া আক্তার নিহতের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের হয়েছে। এই ঘটনায় তদন্তপূর্বক দোষিদের বিরুদ্ধে নেয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা। আর আসামি ধরার ব্যাপারেও চলছে অভিযান।