মুহাম্মদ সুফিয়ান তাসদিক
পৃথিবীতে
যত মূল্যবান বস্তু আছে, তার চেয়েও অধিক মূল্যবান— পবিত্র কুরআন। এটি শুধু
একটি ধর্মীয় গ্রন্থ নয়, বরং মানবতার দিশারি, ন্যায়বিচারের আলো এবং জীবনের
প্রতিটি ক্ষেত্রের পথপ্রদর্শক। যে হৃদয়ে কুরআনের প্রতি ভালোবাসা নেই, সে
হৃদয় শূন্য মরুভূমির মতো; যেখানে আলোর কোন ছোঁয়া নেই।
আর যে জিহ্বা বা হাত কুরআনের প্রতি অবমাননা করে, সে শুধু একটি বইকে নয় — বরং মুসলিম জাতির আত্মাকে অপমান করে, ঈমানের মূলকে আঘাত করে।
কুরআন
আল্লাহর কালাম। এ কথা উচ্চারণ করা মানেই আল্লাহর কর্তৃত্ব মেনে নেওয়া।
মুসলমান তার জীবন, মৃত্যু, নীতি ও নৈতিকতার প্রতিটি ধাপে এই কুরআনের
নির্দেশে পরিচালিত হয়।
তাই যখন কেউ কুরআনের অবমাননা করে, তখন তা শুধু
একটি ধর্মীয় অপরাধ নয়; বরং এটি আল্লাহ, তাঁর রাসূল ﷺ এবং গোটা মুসলিম
সমাজের বিরুদ্ধে ঘোষিত যুদ্ধ।
রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন:“যে ব্যক্তি আল্লাহ, তাঁর আয়াত বা তাঁর রাসূলকে উপহাস করে, সে কাফের হয়ে যায়।”
(সূরা আত-তাওবা: ৬৫–৬৬)
ইসলামী
শরীয়তে কুরআন অবমাননাকে ‘মুরতাদী অপরাধ’ হিসেবে গণ্য করা হয়। এমন ব্যক্তি
সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করে, অন্যদের ঈমানকে নষ্ট করার পথ খুলে দেয়। এজন্য
ইসলামী আইন তার সর্বোচ্চ শাস্তি নির্ধারণ করেছে — ফাঁসি।
এই শাস্তি কোনো
প্রতিশোধ নয়, বরং এটি ঈমান, শান্তি ও মানবতার রক্ষাকবচ। কারণ, যদি পবিত্র
কুরআনের মর্যাদা নষ্ট হয়, তবে নৈতিকতা ও ন্যায়বিচারের সব দরজা বন্ধ হয়ে
যায়।
অনেকে আবার এখানে মানবাধিকারের প্রশ্ন তুলে বলেন, ফাঁসি
মানবাধিকারের পরিপন্থী। কিন্তু সত্য হলো — যে অপরাধ আল্লাহর বাণীকে পদদলিত
করে, কোটি কোটি মুসলমানের অন্তরে আগুন ধরিয়ে দেয়, সেই অপরাধের ন্যায়বিচার
কঠোর না হলে সমাজ কখনো শান্ত হবে না।
মানবাধিকার মানে অন্যের অনুভূতি ও বিশ্বাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আর কুরআন অবমাননাকারীর কঠোর শাস্তি সেই নিরাপত্তাকেই রক্ষা করে।
ইসলামী
ইতিহাসে এমন বহু দৃষ্টান্ত আছে যেখানে আল্লাহ ও তাঁর বাণীকে উপহাসকারীদের
প্রতি নবী ﷺ ও সাহাবায়ে কেরাম কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছেন।
তারা জানতেন — যদি
ধর্মের ভিত্তি নষ্ট হয়, সমাজ টিকবে না। তাই তারা আইন দিয়ে নয়, ঈমানের
অগ্নিশিখা দিয়ে আল্লাহর বাণীর মর্যাদা রক্ষা করেছেন।
সুতরাং কুরআন শরীফ কেবল অক্ষরের সমষ্টি নয় — বরং এটি আল্লাহর কণ্ঠ, যা মানুষের হৃদয়ে ন্যায়, শান্তি ও প্রেমের বীজ বপন করে।
আর যে এই বাণীকে অপমান করে, সে মানবতার শত্রু, শান্তির ঘাতক।
তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া শুধু ন্যায়বিচার নয়, এটি ঈমানের রক্ষার দায়িত্ব।
তাই আমরা দৃঢ়ভাবে বলি —
কুরআন অবমাননাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি হতে হবে ফাঁসি।
এটাই ন্যায়, এটাই ঈমান, এটাই ইসলামের মর্যাদা রক্ষার পথ।