হুমায়ন কবির মিরাজ, বেনাপোল:
যশোরের শার্শা উপজেলায় চাঞ্চল্যকর ভ্যানচালক আব্দুল্লাহ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। নিখোঁজের পাঁচ দিন পর নির্মাণাধীন একটি বাড়ির ট্রাংক থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে শার্শা থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের যৌথ টিম।
পুলিশ জানায়, গত ১০ অক্টোবর রাতে শার্শার নাভারণ এলাকা থেকে ভ্যানচালক আব্দুল্লাহ (২৫) নিখোঁজ হন। পরদিন ১১ অক্টোবর তার পিতা ইউনুস আলী শার্শা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নং ৫০৫) করেন।
পরে জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই অলক কুমার দে (পিপিএম) নেতৃত্বে ডিবি ও শার্শা থানা পুলিশের যৌথ টিম তদন্তে নামে। আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় ঝিকরগাছা উপজেলার একটি এলাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় আব্দুল্লাহর চালানো ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়। এর সূত্র ধরে ভ্যান বিক্রির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মো. আশানুর জামান আশা (৩৭), মুকুল হোসেন (৩৭) ও সাগর (২৪) নামের তিনজনকে আটক করা হয়।
তাদের গভীর জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আশানুরের নিয়ন্ত্রণাধীন নির্মাণাধীন একটি বাড়ির ট্রাংক থেকে আব্দুল্লাহর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে মুকুলের পরিকল্পনায় ১০ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টার দিকে আশানুর, সাগর ও আব্দুল্লাহ ওই ভবনে প্রবেশ করে। কিছুক্ষণ পর মুকুল নিজেও সেখানে আসে। সবাই মিলে ইয়াবা সেবনের একপর্যায়ে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মুকুল ধারালো ছুরি দিয়ে আব্দুল্লাহকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে। এরপর তিনজন মিলে মরদেহটি ট্রাংকের ভেতর লেপে মুড়িয়ে লুকিয়ে রাখে এবং ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
এ ঘটনায় শার্শা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি ডাকাতি ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আসামি আশানুর জামানের নামে ৮টি এবং সাগরের নামে ৭টি পৃথক মামলা রয়েছে। গ্রেফতারের পর ১৫ অক্টোবর তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়। পরে আশানুর জামান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, অত্যন্ত কৌশলে গুমের পর হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হলেও পুলিশের তৎপরতায় দ্রুত সময়ের মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারীসহ জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে