তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান ইসরাইলের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন। ইসরাইলকে সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র এবং গণহত্যাকারী আখ্যা দিয়ে গাজার সহিংসতা নিয়ে বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন তিনি। এরদোগান জানান যে, গাজার সহিংসতা গোটা মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের শান্তি এবং স্থিতিশীলতাকে গভীরভাবে হুমকির মুখে ফেলেছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) তুরস্কের অ্যান্টালিয়া ডিপ্লোম্যাসি ফোরামে এক বক্তৃতায় এরদোগান গাজার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।তিনি দাবি করেন, গাজার সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার ৮০০ মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী, শিশু এবং সাংবাদিকও রয়েছে। এরদোগান বলেন, “এটা যদি বর্বরতা না হয়, তাহলে বর্বরতা কাকে বলে?” তিনি ইসরাইলকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করেন। গাজার প্রতি ইসরাইলের হামলার বিরুদ্ধে নীরবতা প্রকাশকে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অপরাধে অংশীদার হওয়া হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি তার বক্তব্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন যাতে ইসরাইলের এই সহিংসতা বন্ধ করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এরদোগান বলেন, "ইসরাইলের আচরণ আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারকে স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করছে এবং এটি গণহত্যার শামিল।" এছাড়া, তুরস্কের অবস্থানও স্পষ্ট করেছেন যে, তারা ১৯৬৭ সালের সীমান্তভিত্তিক দ্বি-রাষ্ট্র নীতির সমর্থক এবং পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দেখতে চায়। এর অংশ হিসেবে তুরস্ক ইসরাইলের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিত করেছে এবং আন্তর্জাতিক আদালতে গোষ্ঠী-নিধনের মামলায় অংশ নিয়েছে।
এরদোগান সিরিয়া প্রসঙ্গেও বলেন যে, ইসরাইল সেখানে সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত বিভাজন সৃষ্টি করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে। তিনি তাঁর অভিযোগে বলেন যে, ইসরাইল সিরিয়ার সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, যা গোটা অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তাকে বিপন্ন করছে।ইসরাইল এখন একটি সমস্যা হয়ে উঠেছে যা সরাসরি গোটা অঞ্চলের জন্য হুমকি।"
এরদোগান তুরস্কের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেন, "সিরিয়ার নিরাপত্তা মানে তুরস্কের নিরাপত্তা।" তিনি জোর দিয়ে বলেন, তুরস্ক শুধু একটি আঞ্চলিক শক্তি নয়, বরং গোটা অঞ্চলের জন্য একটি দায়িত্বশীল অংশীদার হিসেবে কাজ করছে। এরদোগানের এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বার্তা প্রদান করেছে।