গাজার উত্তরাঞ্চলে ত্রাণ সহায়তা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। হামাস সদস্যদের বিরুদ্ধে ত্রাণবাহী ট্রাক লুটের অভিযোগ ওঠার পর বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রশাসনের দুই কর্মকর্তা। তবে দক্ষিণ গাজায় সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মুখোশধারী বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ত্রাণবাহী ট্রাকের ওপরে উঠে পড়ছে। কারও হাতে রাইফেল, আবার কারও হাতে লাঠি। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পরই উত্তরে ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। তবে গাজার স্থানীয়রা বলছেন, হামাস সদস্যরা ত্রাণ লুট করেননি বরং নিরাপত্তার স্বার্থে ট্রাকগুলোর পাহারায় ছিলেন।
ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাতজ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “হামাস যেন ত্রাণ নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারে, সে জন্য সেনাবাহিনীকে দ্রুত একটি পরিকল্পনা নিতে বলা হয়েছে।”তারা বলেন, গাজার উত্তরের বেসামরিকদের জন্য পাঠানো ত্রাণ হামাস সদস্যরা দখল করে নিচ্ছেন—এমন তথ্য পেয়েছেন তারা। ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মেনসার সাংবাদিকদের বলেন,“দক্ষিণ গাজায় ত্রাণ সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে, তবে উত্তরের বিষয়ে আমরা নজর রাখছি।”
স্থানীয় গোষ্ঠীর বক্তব্য
গাজার প্রভাবশালী সামাজিক সংগঠন ‘হায়ার কমিশন ফর ট্রাইবাল অ্যাফেয়ার্স’ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ত্রাণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্থানীয় গোষ্ঠীগুলোর উদ্যোগে বাস্তবায়ন হয়েছে। সেখানে কোনও রাজনৈতিক সংগঠন, এমনকি হামাসের সম্পৃক্ততা নেই। হামাসও ত্রাণ বিতরণ প্রক্রিয়ায় নিজেদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
একমাত্র অনুমোদিত সংস্থা
গাজায় বর্তমানে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন নামক একটি সংস্থা মার্কিন ও ইসরায়েলি সমর্থনে দক্ষিণ ও মধ্য গাজায় ত্রাণ বিতরণের অনুমতি পেয়েছে। সংস্থাটি জানায়, তারা দুই দিনের নিষেধাজ্ঞার আওতা থেকে অব্যাহতি পেয়েছে এবং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
পটভূমি
প্রায় দুই বছর ধরে চলা সংঘাতে গাজায় বহুবার মানবিক সহায়তা ব্যাহত হয়েছে। হামাস, ফাতাহ, বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন ও স্থানীয় গোষ্ঠীগুলোর যৌথ ব্যবস্থাপনায় সহায়তা বিতরণ চললেও, সম্প্রতি সংঘাত ও অনাস্থার কারণে সহযোগিতা কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়েছে। গাজার গোত্রভিত্তিক সমাজব্যবস্থা বহু বছর ধরে মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে।