আমিনুল হক, নিজস্ব প্রতিনিধি:
মাহে রমজান মাস পুরোটাই কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ছিল প্রায় সুনসান নীরবতা।সে সময়টাতে হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস ও রিসোর্টগুলো ছাড় দিয়েও অতিথি পায়নি। বন্ধও ছিল পর্যটক নির্ভর রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য ব্যবসা। সেই নীরবতা ভেঙেছে এখন ঈদুল ফিতরের ছুটিতে। ঈদের দিন দুপুর থেকেই স্থানীয়রা সৈকতমুখী হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার(১এপ্রিল) থেকে আসবেন বাইরের জেলার ভ্রমণপ্রেমীরা।
ইতিমধ্যে পর্যটকদের বরণ করে নিতে হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও রেস্তোরাঁগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সংস্কার করে প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হকাররাও নব উদ্যমে তাদের প্রস্তুতি নিয়েছেন।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই ঈদে ৯ দিনের লম্বা ছুটিতে চাকরিজীবীদের বড় একটি অংশ সপরিবারে বেড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন।লম্বা ছুটি বা বিশেষ দিনে ভ্রমণপিপাসুদের বরাবরই পছন্দের জায়গা কক্সবাজার। কারণ তারা এখানে সমুদ্রসৈকত ছাড়াও পাহাড়, নদী, ছড়া, ঝিরি-ঝরনাসহ প্রকৃতির অপরূপ সব সৌন্দর্য দেখার সুযোগ রয়েছে।
হোটেল-মোটেল মালিকরা জানিয়েছেন, রমজানের আগের চার মাসে বিপুলসংখ্যক পর্যটক কক্সবাজার ঘুরতে এসেছেন।তখন প্রতি সপ্তাহে গড়ে আড়াই থেকে তিন লাখ পর্যটক এসেছিলেন। আর গত বছর ঈদুল ফিতরের ছুটিতে অন্তত ১০ লাখ পর্যটকের সমাগম হয়েছিল। এবার অনেকেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে অনলাইন বা ফোনে যোগাযোগ করে রুম বুকিং দিয়েছেন। ২ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৮০ শতাংশ রুম বুকিং রয়েছে। কক্সবাজার শহর ও মেরিন ড্রাইভের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস ও রিসোর্টে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, ‘বাইরের পর্যটকেরা ঈদের পরদিন থেকে কক্সবাজারমুখী হবেন। পর্যটকরা ভ্রমণে এসে যাতে সমস্যার সম্মুখীন না হন এর জন্য অনলাইনে হোটেল বুকিং দিয়ে এলেই সবচেয়ে ভালো।’
কক্সবাজার অঞ্চলের টুরিস্ট পুলিশ অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ জানান, পর্যটকদের অতিরিক্ত চাপ বাড়ার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সমুদ্রসৈকত ও পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষণিক টুরিস্ট পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। টুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও এখানে তৎপর রয়েছে।
বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ রফিউজ্জামান জানান,এবারের এই ঈদে ছুটি বেশি হওয়ায় অনেকে গ্রামের বাড়িতে গেছেন এবং সেখান থেকে কাছাকাছি পর্যটন স্পটে ঘুরতে বের হবেন। ফলে কোনো নির্দিষ্ট স্থানে অতিরিক্ত ভিড় হবে না। এটি পর্যটনের জন্য ইতিবাচক, কারণ অতিরিক্ত ভিড় হলে পর্যটকরা ঠিকভাবে ভ্রমণ করতে পারেন না এবং হোটেল বুকিং পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।